এইচ আর আবির

Learn - Discover

বুধবার, ১০ মার্চ, ২০২১

NTRCA ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ পাবেন আরও ৪৫ হাজার শিক্ষক

মামলা জটিলতায় প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক পদ শূন্য থাকায় ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষক নিয়োগের জটিলতা কাটাতে সম্প্রতি আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চায় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। সেই মতামত পাওয়ার পর বড় ধরনের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যাচ্ছে সংস্থাটি।

তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে ৫৭ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার কাজ চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়ার কাজ শুরু করেছে এনটিআরসিএ। এতে আরও ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। দুই গণবিজ্ঞপ্তিতে ১ লাখের বেশি শিক্ষক নিয়োগ দেবে এনটিআরসিএ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে শূন্য পদ পূরণে সরকারের এজেন্ডার অংশ হিসেবে এ নিয়োগ চলতি বছরের মধ্যেই শেষ করতে চায় সংস্থাটি।

এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) আশরাফ উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা এখন তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি নিয়ে ব্যস্ত। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতামত পেয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করব।

এনটিআরসিএ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত শিক্ষকের ৫৭ হাজারের বেশি পদ ফাঁকা ছিল। তবে চলতি বছরই ১ হাজার ২৮৪ জনকে শূন্য পদে  নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ দুই বছর নিয়োগ বন্ধ থাকায় নতুন করে আরও ৪৫ হাজার শূন্য পদ সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৫৭ হাজার ও চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাকি ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।

জানা গেছে, শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে শূন্যপদের তথ্য সংশোধনের সুযোগ দিয়েছে এনটিআরসিএ। ৩ মার্চ এনটিআরসিএ থেকে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা দেশের সব শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। আগামী ১৪ মার্চের মধ্যে এসব তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে।  এর আগেও কয়েক দফায় তথ্য সংশোধন করা হয়েছিল। তবে সম্প্রতি ১ হাজার ২৮৪ জন শিক্ষককে নিয়োগ সুপারিশ করার পর অর্ধশত শূন্যপদের তথ্যে ভুল পাওয়া গেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শূন্য পদের তথ্য আবারও সংশোধনের সুযোগ দেয় এনটিআরসিএ।

এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন বলেন, গত দুই বছর নিয়োগ না থাকায় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক পদ শূন্য হয়ে আছে। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সার্বিক শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। এই শূন্য পদ দ্রুত সময়ের মধ্যে পূরণ করতে চাই।

চেয়ারম্যান বলেন, আমি আশাবাদী চলতি বছরের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদগুলো পূরণ করে ফেলব। সে রোডম্যাপ ধরে কাজ করছি, বড় ধরনের কোনো ঝামেলা বা আইনি বাধা যদি না আসে।

আবেদনের ফি কমছে

চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক নিয়োগের কোনো পরিবর্তন না আসলেও আবেদন ফির পরিমাণ কমানো হচ্ছে। আগে প্রতি স্কুলে আবেদনের জন্য ১৮০ টাকা লাগলেও এখন একজন প্রার্থীকে দিতে হবে ১০০ টাকা। একজন প্রার্থী ইচ্ছামতো আবেদন করতে পারবেন।  প্রার্থী প্রথমে বিভাগ, তারপর জেলা এবং উপজেলায় প্রবেশ করে আবেদন করতে পারবেন। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ১০০ টাকা করে লাগবে।

যোগ্য প্রার্থী কত

এনটিআরসিএ’র তথ্য মতে, ১ম থেকে ১৫তম নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করছে এমন যোগ্য প্রার্থীর সংখ্যা ৬ লাখের বেশি। তবে এদের মধ্যে অনেকের অন্যত্র চাকরি হয়েছে, কেউ মারা গেছেন, অনেকে দেশের বাইরে চলে গেছেন বা বয়স শেষ হয়ে গেছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা জানা নেই এনটিআরসিএ’র। কর্মকর্তাদের ধারণা, বর্তমানে ১ লাখ ৭০ থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার যোগ্য প্রার্থী আছেন।

বয়স জটিলতায় এনটিআরসিএ

আসন্ন চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে বয়স নির্ধারণী জটিলতায় পড়বে এনটিআরসিএ। কারণ ২০১৮ সালের জুনের আগে যারা নিবন্ধন পরীক্ষা পাস করেছেন, সবাই আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু এনটিআরসিএ ৩৫ বছর বয়স নির্ধারণ করেছে। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের এক রায়ে বলা হয়, ২০১৮ সালের আগে যারা নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে বয়স প্রযোজ্য হবে না।

এনটিআরসিএ কর্মকর্তারা বলছেন, রায়ের পর বয়সের বাধা উঠে যাওয়ায় আবেদনের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাবে।

ক্রেডিট – DHAKA Post 

- মার্চ ১০, ২০২১ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন

বুধবার, ২২ জুলাই, ২০২০

নিঝুম দ্বীপ : এক অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি!


নিঝুমদ্বীপের পরিচিতিঃ
'নিঝুম দ্বীপ' বাংলাদেশের একটি ছোট্ট দ্বীপ । এটি নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অন্তর্গত । ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার পুরো দ্বীপটিকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে । ২০১০ সালে দ্বীপটি জাহাজমারা ইউনিয়ন হতে পৃথক হয়ে স্বতন্ত্র ইউনিয়নের মর্যাদা লাভ করে। হাতিয়ার মোট ১১ টি ইউনিয়নের মধ্যে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের অবস্হান ১১তম । সম্প্রতি হাইকোর্ট নিঝুম দ্বীপকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ঘোষণা করে। নোয়াখালী জেলার জেলা ব্র্যান্ডিং হল " নিঝুম দ্বীপের জেলা নোয়াখালী।

অবস্থান ও সীমানাঃ
হাতিয়া উপজেলার মূল দ্বীপের দক্ষিণের উপদ্বীপে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের অবস্থান। এ ইউনিয়নের উত্তরে হাতিয়া চ্যানেল ও জাহাজমারা ইউনিয়ন, পশ্চিমে হাতিয়া চ্যানেল ও ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার সাকুচিয়া দক্ষিণ ইউনিয়ন এবং দক্ষিণে ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত।

আয়তন ও জনসংখ্যাঃ
প্রায় ৯১ বর্গ কিমি আয়তনের নিঝুম দ্বীপে ৯টি গুচ্ছ গ্রাম রয়েছে। এই গুচ্ছ গ্রাম ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ছোটখাটো ঝুপড়ি ঘর। ১৯৯৬ সালের হিসাব অনুযায়ী নিঝুম দ্বীপ ৩৬৯৭০.৪৫৪ হেক্টর এলাকা জুড়ে অবস্থিত। জনসংখ্যা প্রায় ২৫ হাজারের মত।

শিক্ষাব্যবস্থাঃ
নিঝুম দ্বীপে রয়েছে ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং একটি উচ্চ-মাধ্যমিক বিদ্যালয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সাইক্লোন শেল্টারে অবস্থিত। স্কুল গুলোর নাম হল বন্দর টিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিঝুম দ্বীপ বিদ্যানিকেতন, শতফুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং নিঝুম দ্বীপ জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয় (২০০০)।

জনপ্রতিনিধিঃ
ইউনিয়নটির জন্ম লগ্ন হতে বর্তমান পর্যন্ত নিঝুম দ্বীপের চেয়ারম্যান মেহেরাজ উদ্দিন।

নামকরনের ইতিহাসঃ
নিঝুম দ্বীপের পূর্ব নাম ছিলো চর-ওসমান আবার কেউ কেউ একে ইছামতীর চরও বলত, এ চরে প্রচুর ইছা মাছ (চিংড়ির স্হানীয় নাম) পাওয়া যেত বলে একে ইছামতির চরও বলা হত। ওসমান নামের একজন বাথানিয়া তার মহিষের বাথান নিয়ে প্রথম নিঝুম দ্বীপে বসত গড়েন। তখন এই নামেই এর নামকরণ হয়েছিলো ওসমান চর।
এ দ্বীপের মাটি চিকচিকে বালুকাময়, তাই জেলেরা নিজ থেকে নামকরণ করে বালুর চর। এই দ্বীপটিতে মাঝে মাঝে বালুর ঢিবি বা টিলার মতো ছিল বিধায় স্থানীয় লোকজন এই দ্বীপকে বাইল্যার ডেইল বা বাল্লারচর বলেও ডাকত। বর্তমানে নিঝুমদ্বীপ নাম হলেও স্থানীয় লোকেরা এখনো এই দ্বীপকে বাইল্যার ডেইল বা বাল্লারচর বলেই সম্বোধন করে।
মূলত বাল্লারচর, চর ওসমান, কামলার চর এবং মৌলভির চর - এই চারটি চর মিলিয়ে নিঝুম দ্বীপ। প্রায় ১৪,০৫০ একরের দ্বীপটি ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের দিকে জেগে ওঠে। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের দিকে জন বসতি গড়ে উঠে। ১৯৭০ এর ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে দ্বীপটিতে কোন প্রানের অস্হিত্ব ছিলনা। ঘূর্ণিঝড়ের পরে তৎকালীন হাতিয়ার জন নন্দিত নেতা, সাংসদ ও প্রাক্তন মন্ত্রী আমিরুল ইসলাম কালাম সাহেব দ্বীপটিতে পরিদর্শনে গিয়ে দেখেন যে কোন প্রানের অস্হিত্ব নাই, তাই তিনি আক্ষেপের সুরে বলে ছিলেন হায় নিঝুম! সেখান থেকে দ্বীপটির নতুন নাম নিঝুম দ্বীপ।

জনবসতিঃ
১৭৯৪ সনের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বুরো কর্তৃক প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী তখন এর জনসংখ্যা ছিলো ৪৫জন। পুরুষ ২৩ জন ও মহিলা ২২জন। স্বার ছিলো ৭জন। এরা সবাই বিভিন্ন যায়গা থেকে এখানে এসে বসতি স্থাপন করেছিলেন। ভোলা, মনপুরা, রামগতি থেকেও অনেকে এখানে চলে আসেন। ১৯৮৮ সনে সরকারি ভাবে ৯টি গুচ্ছগ্রাম সৃষ্টিকরে ৫শ ৪৬টি পরিবারকে বসতির ব্যাবস্থা করা হয়। এই গুচ্ছগ্রাম গুলো হলো, বসুন্ধরা, বাতায়ন, আনন্দ, আগমনি, ছায়াবীথি, ধানসিঁড়ি, যুগান্তর, সূর্যদয় ও পূর্বাচল। এখানে প্রতিটি পরিবারকে দেয়া হয় দুই একর করে জমি। যাতে রয়েছে, বাড়ী ৮ ডিসিমেল ও কৃষি জমি ১ একর ৯২ ডিসিমেল করে। একটি বড় দীঘির চতুর্দিকে বাড়ী গুলো করা হয়েছে। এছাড়াও এ দ্বীপে বর্তমানে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার অধিবাসী বসবাস করছে। দিন দিন এ সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।

অর্থনীতিক সম্ভাবনাঃ
নিঝুম দ্বীপে প্রচুর পরিমাণ বিভিন্ন খনিজ পদার্থ রয়েছে বলে ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংস্থার জরিপে ও বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। এখানে রয়েছে মহিষের বড় বড় বাথান। সবগুলোই স্থানীয় বাথানিয়াদের নিজস্ব উদ্যোগে গড়া। এখান থেকে উৎপন্ন দুধ থেকে তৈরী হয় বিখ্যাত দই। অথচ প্রক্রিয়াজাত করার কোন ব্যবস্থা নেই সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দুগ্ধ খাতে বিপুল অর্থনৈতিক সুফল পাওয়া যাবে। এ ছাড়াও নিঝুম দ্বীপ সংলগ্ন চর কমলা, দমার চর, চর রোশনী, চর রোহানীরা, চর নুরুল ইসলাম, চর পিয়া, ঢালচর, মৌলভী চর, চর গিয়াস উদ্দিন, তেলিয়ার চর, চর রশিদ, চর আজমন, চর আমানত, সাগরদী প্রভৃতি দ্বীপে চারণ ক্ষেত্র করা যেতে যারে। নিঝুম দ্বীপ ঘিরে রয়েছে বিপুল মৎস্য ভান্ডার। এখানে রয়েছে প্রাকৃতিক চিংড়ি জোন। সুস্বাধু ইলিশের চারণ ক্ষেত্র এই জলসীমানা। সুন্দর সুষ্ঠু প্রকৃতি নির্ভর পরিকল্পনা নিলে দেশের অর্থনীতির বিপুল উন্নতি সাধিত হবে বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেছেন।

দর্শনীয় স্হান সমূহঃ
১. কমলার দ্বীপ: সেখানের কমলার খালে অনেক ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। এছাড়াও আশে পাশের দ্বীপগুলো সুন্দর। পুরো দ্বীপটা হেঁটে হেঁটে ঘুরে আসা যায়,মন ভরে যাবে। ঘূর্ণিঝড়ের পরে জাহাজ থেকে এই দ্বীপে কয়েক বাক্স কমলা পড়ে থাকতে দেখে এর নামকরন করা হয় কমলার দ্বীপ।
২. চৌধুরী খাল ও কবিরাজের চর: চিত্রা হরিন
ও হাজার হাজার মহিষের পাল দেখতে পাবেন এখানে।
৩. চোয়াখালি ও চোয়াখালি সী-বিচ: চোয়াখালি তে গেলে খুব সকালে হরিন দেখা যায়।
৪. ম্যানগ্রোভ বন: নিঝুম দ্বীপ বনায়ন প্রকল্প।আছে কেওড়া গাছ আর লতাগুল্ম।হরিনও দেখতে পারবেন এখানে।
৫. নামার বাজার সী-বিচ: নিঝুম দ্বীপের অন্যান্য স্হানের তুলনায় নামার বাজারটি কিছুটি নিচু প্রকৃতির হওয়ায় এর নামকরন করা হয় নামার বাজার। নামার বাজার থেকে হেঁটে যেতে ১০ মিনিট লাগে। এখান থেকে সূর্য উদয় ও সূর্যাস্ত দেখতে পাবেন।বিচ থেকে বামে কিছু দূর হেটে প্রসিদ্ধ খেজুর গাছের সারি দেখতে পাবেন।
৬. দমার চর: বঙ্গোপসাগরের কোলে সম্প্রতি আরো একটি অনিন্দসুন্দর সমুদ্র সৈকত জেগে উঠেছে। সৈকতটি একেবারে আনকোরা, কুমারী। একে এখন ডাকা হচ্ছে 'ভার্জিন সি বিচ' বলে। নিঝুম দ্বীপের লোকজন এবং মাছ ধরতে যাওয়া লোকেরা এই নয়নাভিরাম সৈকতকে বলে ‘দেইলা’ বা বালুর স্তুপ। তাদেরকে আজ পর্যন্ত কেউ বলেনি যে আসলে এটা একটা সমুদ্র সৈকত। যা কিনা কক্সবাজরের সমুদ্র সৈকতের চেয়েও অনেক বেশী সুন্দর এবং আকর্ষণীয়। যা এখনো অনেক ট্যুরিস্ট এর কাছেই আজান অচেনা। এখানে অনেক নাম না জানা পাখির দেখা পাবেন খুব সকালে যদি যান।


জীব বৈচিত্র্য (মাছ, পশু, পাখি ও উদ্ভিদ):
নিঝুম দ্বীপের চর গুলোতে রয়েছে মহিষের পাল। দ্বীপের আশপাশের জঙ্গলেই আছে হরিণ, শেয়াল, বন্য শূকর, নানা রকম সাপ ও বানর।
হরিণের সংখ্যা প্রায় ২২,০০০ (প্রেক্ষাপট ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দ)। নিঝুম দ্বীপে রয়েছে প্রায় ৩৫ প্রজাতির পাখি। এছাড়াও শীতের মৌসুমে অজস্র প্রজাতির অতিথির পাখির অভয়ারণ্যে পরিণত হয় নিঝুম দ্বীপ। নিঝুম দ্বীপে বিশাল এলাকা পলিমাটির চর। জোয়ারের পানিতে ডুবে এবং ভাটা পড়লে শুঁকোয়। এই স্থানগুলোতে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের বসবাস। জোয়ারের পানিতে বয়ে আসা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ এদের একমাত্র খাবার। এখানে রয়েছে মারসৃপারি নামে একধরনের মাছ যাদেরকে উভচর প্রাণী বলা হয়। বর্ষা মৌসুমে ইলিশের জন্য নিঝুম দ্বীপ বিখ্যাত। এই নিঝুম দ্বীপে রয়েছে কেওড়া গাছ। ইদানিং বনবিভাগ কিছু নোনা ঝাউও রোপণ করছে। এছাড়াও রয়েছে প্রায় ৪৩ প্রজাতির লতাগুল্ম এবং ২১ প্রজাতির অন্যান্য গাছ।এখানে এক সাথে ম্যানগ্রোভ বন, সমুদ্র সৈকত, নদী ও সাগর।নিঝুমদ্বীপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো মাইলের পর মাইল জুড়ে কেওড়া বন আর সেই বনের পাতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা চিত্রা হরিণ।


অতিথি পাখির আগমনঃ
শীতকালে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আগত হাজার হাজার পাখির কারণে এখানে রীতিমতো পাখির মেলা বসে যায়, পুরো দ্বীপ তখন পাখির রাজ্যে পরিণত হয়। অন্যান্য সময় বনের কিচিরমিচির পাখির শব্দ, আর ভেসে আসা বাতাসে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চাইবেন প্রকৃতির মাঝে। সাদা বালুতে ঝাঁকে ঝাঁকে লাল কাঁকড়ার বিচরণ। যে সাদা ক্যানভাসে আঁকা প্রকৃতির অপূর্ব এক ছবি।
দ্বীপগুলোতে শীতকালে আসে হাজার হাজার অতিথি পাখি। এদের মধ্যে আছে সরালি, লেনজা, জিরিয়া, পিয়ং, চখাচখি, রাঙ্গামুড়ি, ভূতিহাঁসসহ নানারকম হাঁস, রাজহাঁস, কাদাখোঁচা, জিরিয়া, বাটান, গুলিন্দাসহ জলচর নানা পাখি, হরেক রকমের গাংচিল, কাস্তেচরা ইত্যাদি। কদাচিৎ আসে পেলিক্যান। আর বছরজুড়ে সামুদ্রিক ঈগল, শঙ্খচিল, বকসহ নানা স্থানীয় পাখি তো আছেই।


নদী, খাল সমূহ ও জীবিকাঃ
নিঝুম দ্বীপের এক দিকে মেঘনা নদী আর তিন দিকে বঙ্গোপসাগর ঘিরে রেখেছে।
নিঝুমদ্বীপে খালগুলোর মধ্যে চৌধুরীর খাল, পটকাখালী খাল, সোয়ানখালী খাল, ডুবাই খাল, ধামসাখালী খাল, ভট্রোখালী খাল, কাউনিয়া খাল, লেংটা খাল। খালের জলে হরিণের পানি পানের দৃশ্য এবং পাখিদের স্নান করা ইত্যাদি পর্যটকদের রোমাঞ্চিত করবে। সে দৃশ্য স্বচক্ষে না দেখলে কল্পনা করাও অসম্ভব।
নিঝুমদ্বীপের বর্তমান আয়তন প্রায় ৯১ বর্গকিলোমিটার। এর উত্তর অংশে রয়েছে বন্দরটিলা।বালুর ঢীবি দেখতে অনেকটা টীলার মত মানে গম্বুজের মত উচু দেখাত বলে সে অঞ্চলকে বন্দর ঢিলা নামকরণ করা হয়। দ্বীপের ৭০ ভাগ মানুষ মৎস্যজীবী ও ৩০ ভাগ কৃষিজীবী। গভীর সমুদ্র ও নদীতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছধরে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বসবাসকারীরা থাকে আতঙ্কিত। তবুও জীবিকার টানে তাদের গভীর সমুদ্রে পারি জমাতে হয়।

সমুদ্র সৈকত ও তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যঃ
সমুদ্র পাড়ে ১২ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকত, সৈকতে এরা ভ্রমণবিলাসীদের মনে আনন্দ ছড়ায়। পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে নিঝুমদ্বীপের খ্যাতি দিনকে দিন বেড়েই চলছে। যাতায়াত ব্যবস্থাও এখন সহজ হয়ে যাওয়ায় নিঝুমদ্বীপ এখন পর্যটকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকেই আপনি চাইলে নিঝুমদ্বীপে যেতে পারেন। আর উপভোগ করতে পারেন অপার সৌন্দর্যে ঘেরা নিঝুমদ্বীপকে। জ্যোৎস্নার আলোয় বেলাভূমিতে সাগরের ফেনীল ঊর্মীমালা আছড়ে পড়ার অপূর্ব দৃশ্য কাউকে আলোড়িত না করে পারে না। সাদাটে রুপালি অর্ধেক চাঁদের আলো যে এতটা সুন্দর হতে পারে, তা হয়তো নিঝুমদ্বীপে না গেলে বুঝতেই পারবেন না। দ্বীপের দক্ষিণপ্রান্ত থেকে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত অবলোকন করা যায়।

বনবিভাগের কার্যক্রমঃ
বাংলাদেশের বনবিভাগ ৭০-এর দশকে বন বিভাগের কার্যক্রম শুরু করে। প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে চার জোড়া হরিণ ছাড়ে। নিঝুম দ্বীপ এখন হরিণের অভয়ারণ্য। ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দের হরিণশুমারি অনুযায়ী হরিণের সংখ্যা ২২,০০০। নোনা পানিতে বেষ্টিত নিঝুম দ্বীপ কেওড়া গাছের অভয়ারণ্য। ম্যানগ্রোভ বনের মধ্যে সুন্দরবনের পরে নিঝুম দ্বীপকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন বলে অনেকে দাবী করেন। বনবিভাগ নিঝুম দ্বীপের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন, বন্যপ্রাণী (হরিণ) নিধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। বনবিভাগের পদক্ষেপে নতুন জেগে উঠা চরে লাগানো হচ্ছে কেওড়া গাছের চারা। বনবিভাগ এটিকে জাতীয় উদ্যান করার পরিকল্পনা শুরু করেছে। এছাড়াও বনবিভাগ এই অঞ্চলে আগে লাগানো কেওড়া বন রক্ষায় স্থানীয়দের সাথে মিলেমিশে কাজ করছে।

পর্যটন নিবাসঃ 
নিঝুম দ্বীপে পর্যটকদের জন্য রয়েছে
১। নিঝুম রিসোর্ট (অবকাশ হোটেল) নামার বাজার ২। হোটেল শাহিন,নামার বাজার ৩। হোটেল সোহেল,নামার বাজার: রুম ভাড়া ৪। মসজিদ বোর্ডিং, নামার বাজার ৫। নিঝুম ড্রিম ল্যান্ড রিসোর্ট, বন্দরটিলা ৬। হোটেল দ্বীপ সম্পদ,(সৈয়দ চাচার থাকা ও খাওয়ার হোটেল) নামার বাজার ৭। হোটেল শেরাটন, বন্দরটিলা বাজার । ৮। জেলা পরিষদ ডাক বাংলো ৯। বন বিভাগের ডাকবাংলো ১০।মাহমুদ বোডিং ১১। প্রাথমিক বিদ্যালয়।

তথ্যসূত্রঃ
সম্ভাবনাময় হাতিয়া বাংলার সিঙ্গাপুর
মোঃ রিপাজ উদ্দিন
লেখক ও গবেষক
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ
- জুলাই ২২, ২০২০ ২টি মন্তব্য:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন

সোমবার, ৪ মে, ২০২০

বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশের মানচিত্র: বঙ্গোপসাগরে জেগে উঠছে নতুন আরেক বাংলাদেশ ।

চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বরিশাল, খুলনাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সাগরের বুক চিরে জেগে উঠছে নতুন নতুন ভূখণ্ড। বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে উঠছে আরেক নতুন বাংলাদেশ। উজানি নদীর পানিবাহিত পলি জমে বিশেষ করে নোয়াখালী জেলার দক্ষিণে সাগরের বুকে জেগে উঠছে শতাধিক ছোট দ্বীপ। কোনোটি জোয়ারে ডুবে যায়, ভাটায় আবার ভেসে উঠে। কোনোটির কিছু অংশ জোয়ারেও ডোবে না। একটু পানির নিচে থাকা নতুন করে জেগে ওঠা এসব ভূমির পরিমাণ প্রায় ৩৩ হাজার বর্গকিলোমিটার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বঙ্গোপসাগরের নোনাজল হটিয়ে তার বুকে গড়ে তোলা হচ্ছে একেকটি দ্বীপখণ্ড আর এইসব দ্বীপে কৃত্রিম ভাবে সৃষ্টি করা হচ্ছে বনভূমি, গড়ে উঠছে বসতি। এরই মধ্যে বঙ্গোপসাগরের বুকজুড়ে প্রায় ২ হাজার ২০০ বর্গমাইল আয়তনের ভূখণ্ড গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে।
কেউ কেউ মনে করেন এই চেষ্টা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের মূল ভূখন্ডের চেয়েও বড় ভূখন্ড গড়ে তোলা সম্ভব হবে, তবে তৈরি হচ্ছে নিঝুমদ্বীপের মতো দৃষ্টিনন্দন বনাঞ্চল। একাজ যদিও থেমে নেই, চলছে বড়ই ঢিমেতালে। আছে অর্থ সমস্যা, জনবল সংকট-সর্বোপরি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে অগ্রাধিকারভিত্তিক গুরুত্বও পাচ্ছে না। বাংলাদেশ ডুববে না বরং দক্ষিণে বাড়বে এই তত্ত্বের প্রণেতাদের মতে, সময় যতই গড়াবে দক্ষিণে বাংলাদেশ ততই বাড়তে থাকবে। ভারত, চীন ও মিয়ানমার নদীব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রতি বছর বিলিয়ন বিলিয়ন টন পলিমাটি গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনার মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জমা হচ্ছে। এভাবে ১৭৮০ সাল থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ২০০ বছরে বাংলাদেশের দক্ষিণে ৬২৯ বর্গকিলোমিটার আয়তন বেড়েছে। তবে প্রাকৃতিক নিয়মে এই ভূমি গঠন প্রক্রিয়া অত্যন্ত ধীরগতিতে অগ্রসর হচ্ছে। সমুদ্রের অগভীর অংশে ডাইক বা কংক্রিট ড্যাম নির্মাণ করে পলিমাটি আটকাতে পারলে শিগগিরই কমপক্ষে ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার নতুন ভূমি উদ্ধার করা সম্ভব হবে। বন অধিদপ্তর, ন্যাদারল্যান্ড সরকারের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত এ্যাকচুয়ারি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (ইডিপি), উপকূলীয় এলাকায় গবেষণাভিত্তিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম) ও সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিস (সিইজিআইএস) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
১৯৮৬
১৯৯৮
২০০০
২০০৫
 ২০১০
২০২০

সমুদ্রের অথৈ জলে প্রাকৃতিকভাবেই বিশাল বিশাল চর জেগেছে, গড়ে উঠেছে মাইলের পর মাইল ভূখণ্ড। দীর্ঘদিন ধরে শুধুই ডোবা চর হিসেবে পরিচিত বেশ কয়েকটি চরভূমি ইতিমধ্যে স্থায়ী ভূখণ্ডে পরিণত হয়েছে। সেসব স্থানে জনবসতিও গড়ে উঠেছে। একই ধরনের আরও প্রায় ২০টি নতুন ভূখণ্ড এখন স্থায়িত্ব পেতে চলেছে। বঙ্গোপসাগরে দুই-তিন বছর ধরে জেগে থাকা এসব দ্বীপখণ্ড ভরা জোয়ারেও আর তলিয়ে যাচ্ছে না, বরং দিন দিনই বেড়ে চলছে এর আয়তন। একই রকম ডোবা চরের সংখ্যা ৪০ থেকে ৫০ বা তারও অধিক হবে। সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (সেজিস) সাম্প্রতিক এক জরিপেও ৫৫ হাজার ৫৯৮ বর্গকিলোমিটারের এই দেশের আয়তন আরো বাড়ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সমুদ্র উপকূল ঘেঁষে জেগে উঠছে নতুন এক বাংলাদেশ।
সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (সেজিস) বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক এক জরিপে এ আশার কথা জানা গেছে। জরিপে গত ৩২ বছরের বিভিন্ন সময়ের স্যাটেলাইট চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, হিমালয় থেকে নেমে আসা বৃহৎ নদীগুলোর বাহিত পলি জমে বাংলাদেশের আয়তন প্রতি বছর ২০ বর্গকিলোমিটার করে বাড়ছে।
বাংলাদেশের ভূখন্ডের আয়তন বাড়াতে সরকারের একটি মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় হবে ১০৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা। পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র এবং মেঘনা নদী হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগরের দিকে যাত্রাপথে প্রচুর পরিমাণে পলি বহন করে। এ পলি উপকূলের কাছাকাছি ক্রমান্বয়ে জমা হয়ে নদী ও বঙ্গোপসাগরের তলদেশের উচ্চতা বাড়িয়ে চরের সৃষ্টি করে থাকে। এ প্রক্রিয়ায় গত দুই দশকে ২ হাজার বর্গ কিলোমিটারের বেশি নতুন চরের সৃষ্টি হয়েছে। এসব চরের ভূমিকে স্থায়ী রূপ দিতে বনায়ন করা প্রয়োজন, যা জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধ করবে। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ এবং কৃষিপ্রধান দেশে জেগে ওঠা নতুন চর ভূমির স্থায়ীকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কাজে ম্যানগ্রোভ বনায়ন কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

নোয়াখালী সদর উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে ২০০৫ সালের ২ এপ্রিল গঠিত হয় সুবর্ণচর উপজেলা। আয়তন ৫৭৬.১৪ বর্গকিলোমিটার। উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২ লাখ ৮৯ হাজার। নোয়াখালী জেলার নতুন উপজেলা এটি। এক সময় সুবর্ণচরের অস্তিত্ব ছিল না। ১৯৭০ সাল থেকে ধীরে ধীরে বনায়নের মাধ্যমে এই উপজেলার সৃষ্টি হয়েছে। একইভাবে চলমান প্রকল্পের আওতায় গ্রিন বেল্টের মাধ্যমে ২০২১ সালেই দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে ২৫০ বর্গ কিলোমিটার ভূমি যুক্ত হবে বলে জানিয়েছে বন অধিদপ্তর। এদিকে হাতিয়াকে ঘিরে বিশাল বিশাল আয়তনের চরগুলো জেগে ওঠার বর্তমান হার অব্যাহত থাকলে এবং নদী ও ভূ-বিশেষজ্ঞ দ্বারা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে হাতিয়ার ভাঙনের মাত্রা কমানো গেলে অদূর ভবিষ্যতে গোটা বাংলাদেশের চেয়েও বড় এক ভূখণ্ড সৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। নিঝুমদ্বীপ, নলেরচর, কেয়ারিংচর, জাহাজেরচরসহ বেশ কয়েকটি নতুন দ্বীপ যেন আরেক বাংলাদেশের জানান দিচ্ছে। এর মধ্যে নিঝুমদ্বীপে গড়ে উঠেছে ৫০ হাজার লোকের নতুন বসতি ও বনায়ন। এ ছাড়া দ্বীপ হাতিয়ার পশ্চিমে ঢালচর, মৌলভীরচর, তমরুদ্দিরচর, জাগলারচর, ইসলামচর, নঙ্গলিয়ারচর, সাহেব আলীরচর; দক্ষিণে কালামচর, রাস্তারচরসহ অন্তত ১৫টি দ্বীপ ১৫-২০ বছর আগ থেকে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে উঠেছে। যে মুহূর্তে জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের সিংহভাগ ভূখণ্ড সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বিশ্বজুড়ে তোলপাড় চলছে, ঠিক সে মুহূর্তেই দেশের এই অভাবনীয় সম্ভাবনা সীমাহীন আশা জাগিয়েছে জনমনে। এ ছাড়া ঢালচর, নলেরচর, কেয়ারিংচর, মৌলভীরচরসহ কয়েকটি দ্বীপে জনবসতি গড়ে উঠেছে। এসব দ্বীপে বন বিভাগ সবুজ বনায়ন করেছে। তবে জলদস্যু-বনদস্যুদের ভয়ে বাকি দ্বীপগুলোতে এখনো বসবাস শুরু হয়নি। এখনো অন্তত ৪০-৫০টি ডুবোদ্বীপ রয়েছে, যা আগামী পাঁচ-সাত বছরের মধ্যে জেগে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিবছর এভাবে অন্তত ২০ বর্গকিলোমিটার নতুন চরের দেখা মিলছে। তবে নদী ও সমুদ্র উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে ব্যাপক ভাঙনের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে এর আট বর্গ কিলোমিটার। ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে প্রাকৃতিকভাবেই প্রতিবছর বাংলাদেশের মানচিত্রে যোগ হচ্ছে অন্তত ১২ বর্গ কিলোমিটার ভূমি। তবে পরিকল্পিত উপায়ে সরকারি উদ্যোগ নিলে এই বৃদ্ধির পরিমান বেড়ে ২০ বর্গকিলোমিটারে দাঁড়াতে পারে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ন্যাদারল্যান্ড সরকারের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত এ্যাকচুয়ারি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (ইডিপি) কনসাল্টেন্ট এস আর খান জানান, তাদের প্রকল্পের দেশী বিদেশী কনসাল্টেন্টদের গবেষণা ও জরিপ কার্যক্রমে দেখা গেছে ১৯৭৩ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত নোয়াখালী উপকুলে ৫৭৩ বর্গকিলোমিটার ভূমি নদী থেকে জেগে ওঠে। আবার একই সময়ে জেগে ওঠা ভূমির ১৬২ বর্গকিলোমিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত টিকেছে ৪১১ বর্গকিলোমিটার। বছরে গড় বৃদ্ধি দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৭৫ বর্গ কিলোমিটার।
নোয়াখালী উপকুলে নতুন ভূমি জাগা নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এস আর খান বলেন, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ এবং উরির চররের সঙ্গে নোয়াখালীর উপকুলীয় এলাকার চরগুলোকে ক্রসড্যামের মাধ্যমে যুক্ত করা গেলে ৯৪০ বর্গকিলোমিটার নতুন ভূমি জাগবে বলে প্রকৌশলীরা মনে করছেন। সেক্ষেত্রে প্রতিবছর নোয়াখালী চরভূমি জেগে ওঠার হার দাঁড়াবে ২০ বর্গকিলোমিটারে।
সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগরে নতুন চর জেগে ওঠে। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এগুলো অনেক সময় হারিয়ে যায় সাগরের গর্ভে। তাই নতুন চর স্থায়ীকরণের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যেই দেশের উপকূলীয় এলাকায় ২৫০ বর্গ কিলোমিটার ভূমি বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে বন অধিদপ্তর। নতুন চর জেগে ওঠার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিতকরণের পাশাপাশি স্থায়ীকরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে কয়েক লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। জেগে ওঠা চর রক্ষায় ২৫ হাজার হেক্টর উপকূলীয় বনায়ন, ৪০ হাজার বসতবাড়ি বনায়ন ও চরে স্ট্রিপ বনায়ন করা হবে। প্রতি হেক্টরে ৪ হাজার ৪৪৪টি কেওড়া, বাইন, কাঁকড়া ইত্যাদি ম্যানগ্রোভ প্রজাতির চারা রোপণ করা হবে। চারা থেকে চারার দূরত্ব হবে ১ দশমিক ৫ মিটার। চারাগুলো সারি আকারে রোপণ করা হবে। সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ১ দশমিক ৫ মিটার। বসতবাড়িতে নারিকেল, সুপারি, তাল, খেজুরসহ বনজ ও ফলজ চারা রোপণ করা হবে।
বন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা নতুন চরসহ উপকূলীয় এলাকায় বনায়ন প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রকল্পের মাধ্যমে উপকূল জুড়ে সবুজ বেষ্টনী সৃজন এবং দেশের আয়তন বৃদ্ধি করা হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অভিযোজন এবং নেতিবাচক প্রভাব হ্রাসে ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে কার্বন মজুদ বৃদ্ধি করা হবে। আবাসস্থল এবং প্রজনন সুবিধার উন্নয়নের মাধ্যমে সামুদ্রিক উদ্ভিদ ও প্রাণীকূলের জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধি পাবে।

সূত্র আরও জানায়, ২০১৮ সাল থেকে প্রকল্পের আওতায় বনায়ন শুরু হয়েছে। মূলত উপকূলীয় এলাকায় পানির মধ্যে বনায়ন শুরু হয়েছে। বনায়নের ফলে গ্রিন বেল্ট তৈরি হবে। ফলে একদিকে উপকূলীয় এলাকা নিরাপদ থাকবে অন্যদিকে ভূমি বাড়বে। যেমন শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বুলবুল ও সুনামি বঙ্গোপসাগর দিয়ে মূলত বাংলাদেশের স্থলভাগে প্রবেশ করেছে। প্রবেশের সময় ঘূর্ণিঝড়ের একপাশে ছিল পশ্চিমবঙ্গ, আর সুন্দরবন ছিল তিন পাশে। সুন্দরবন অতিক্রম করতে ঘূর্ণিঝড়ের দীর্ঘসময় লাগে ও গতি কমে আসে। ফলে পূর্ণ শক্তি নিয়ে বুলবুল বাংলাদেশের স্থলভাগে আঘাত করতে পারেনি। একইভাবে গ্রিন বেল্টের মাধ্যমে উপকূল প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাবে। অন্যদিকে বনায়নের ফলে সেডিমেন্ট জমা হতে হতে এক সময় মাটি উঁচু হবে। এসব স্থানে জোয়ারের পানি উঠবে না এবং সবুজ ঘাস জন্ম নেবে। ফলে স্থায়ী ভূমিতে রূপ নেবে উপকূলে জেগে ওঠা চর।

বন অধিদপ্তরের উপপ্রধান (বন সংরক্ষক) মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, প্রকল্প সঠিকভাবে এগিয়ে চলছে। ২০১৮ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কোনো ধরনের সমস্যা নেই। আমাদের অন্যতম টার্গেট ২০২১ সালের মধ্যেই ২৫০ বর্গ কিলোমিটার ভূমি বৃদ্ধি করে ভূমি মন্ত্রণালয়কে বুঝিয়ে দেয়া। এক সময় সুবর্ণচর ছিল না, বনায়নের মাধ্যমেই এটা সৃষ্টি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্প চলমান। সুন্দর মতো কাজ চলছে। লক্ষ অর্জিত হবে। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য গ্রিন বেল্ট তৈরি করা। এর ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। দেশের জন্যই গ্রিন বেল্ট তৈরি করছি। এটা একটা ন্যাচারাল ব্যারিয়ার। মূল ভূমি বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা বনায়ন করছি নরম কাদা মাটিতে। ফলে এক সময় পলি বেশি জমা হয়ে মাটি উঁচু হবে। এক সময় জোয়ারের পানি উঠবে না। তখন ঘাস হবে এভাবে সুবর্ণচরের মতো ২০২১ সালেই ২৫০ বর্গ কিলোমিটার জমি ভূমি মন্ত্রণালয়কে বুঝিয়ে দিতে পারবো।

যেসব স্থানের নতুন চরে বনায়ন করা হবে সেগুলো হচ্ছে- পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলা, দশমিনা, দুমকি, গলাচিপা, কলাপাড়া, মির্জাগঞ্জ, পটুয়াখালী সদর ও রাঙ্গাবালী উপজেলা। বরগুনা জেলার আমতলী, বামনা, বরগুনা সদর, বেতাগী, পাথরঘাটা ও তালতলী উপজেলা। পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলা। ভোলা জেলার ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন, চরফ্যাশন, দৌলতখান, লালমোহন, মনপুরা এবং তজুমুদ্দিন উপজেলা। নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ, চাটখিল, কোম্পানিগঞ্জ, হাতিয়া, সেনবাগ, নোয়াখালী সদর, সুবর্ণচর, সোনাইমুড়ি ও কবিরহাট উপজেলা। লক্ষ্মীপুর জেলার লক্ষ্মীপুর সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি ও কমলগঞ্জ উপজেলা। ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া, দাগনভূঁইয়া, ফেনী সদর, পরশুরাম, ফুলগাজী ও সোনাগাজী উপজেলা। চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই, ফটিকছড়ি, রাঙ্গুনিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, বোয়ালখালী, হাটহাজারী, লোহাগড়া, পাহাড়তলী, পটিয়া, রাউজান, সন্দ্বীপ, সীতাকুণ্ড ও চট্টগ্রাম সদর উপজেলা। কক্সবাজার জেলার রামু, কক্সবাজার সদর, চকরিয়া, উখিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া এবং পেকুয়া উপজেলা।

জালবায়ু পরিবর্তনের ফলে সাগরের পানির উচ্চতা বেড়ে বাংলাদেশের দক্ষিণবঙ্গ একদিন তলিয়ে যাবে শুরু থেকেই এ তত্ত্বের যারা বিরোধিতা করে আসছেন তাদের মধ্যে অন্যতম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রফেসর বিশিষ্ট পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব। প্রফেসর রবের মতে, বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চল ছাড়া প্রায় পুরো সমতলভাগ গঠিত হয়েছে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনার মাধ্যমে উজান থেকে বয়ে আনা পলিমাটির মাধ্যমে। এ প্রক্রিয়া এখনো বহমান এবং দক্ষিণে বাংলাদেশ ক্রমে বাড়তে থাকবে।

প্রফেসর রবের মতে, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনার মাধ্যমে প্রতি বছর ২.৪ বিলিয়ন টন (এক বিলিয়ন=১০০ কোটি) পলিমাটি বঙ্গোপসাগরে জমা হচ্ছে। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এ তিনটি প্রমত্তা নদীর বিশাল অংশ রয়েছে ভারত ও চীনে। ভারতের জাতীয় নদী গঙ্গার দৈর্ঘ্য ১৫৬০ মাইল এবং ব্রহ্মপুত্রের দৈর্ঘ্য ১৮০০ মাইল। এ তিনটি নদী ছাড়াও ভারত ও চীনের অন্যান্য নদীব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিলিয়ন বিলিয়ন টন পলিমাটি বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে বঙ্গোপসাগরে জমা হচ্ছে। বৃষ্টি ও অন্যান্য কারণে বাংলাদেশের বাইরে বিশাল এসব নদীর বিস্তৃত অববাহিকা বিধৌত হয়ে বিপুল পলিমাটি বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে সাগর মোহনায় জমা হচ্ছে। সিলেট, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লার লালমাই পাহাড় ছাড়া গোটা বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে এভাবে পলি জমে। বিশেষ করে পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ বলে খ্যাত গাঙ্গেয় বদ্বীপ এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ। এ জন্য বাংলাদেশকে বলা হয় ‘গিফট অব দ্য বে’।

©মুহাম্মদ নূরে আলম

- মে ০৪, ২০২০ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন

রবিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২০

সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে: প্রধানমন্ত্রী

করোনা পরিস্থিতির কারণে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি নিয়ে ভি‌ডিও কনফারেন্সে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, এখন আমরা আর স্কুল-কলেজ খুলছি না। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
সোমবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকা‌রি বাসভবন গণভবন থেকে রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবি‌নিময় করছেন তিনি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা ক‌রছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ‌্য স‌চিব ড. আহমদ কায়কাউস।

এর আগে, করোনার কারণে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি অনুযায়ী দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ৫ মে ২০২০ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলা জানানো হয়েছিল। করোনা ভাইরাসের সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে কয়েক দফা সরকার সাধারণ ছুটি ঘোঘণা করে সরকার। সে ছুটি অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ করে দেয়া হয়।

সূত্রঃ সময়নিউজটিভি
ভিডিও: https://youtu.be/8jLm2G_-rq4
- এপ্রিল ২৬, ২০২০ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন

বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২০

এইবার বলেন, ঠিক কিনা?

আর একদিন পর রমজান।। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের কাছে এটা একটা পবিত্র মাস। তবে এইমাসের লৌকিক আচরন থেকেও সাম্যের যে অসাধারন শিক্ষা আছে সেটা দিন দিন আচারের আতিশায্যে হারিয়ে যাচ্ছে।।ধর্মীয় আইনকে সাম্য,ন্যায়বিচারের টুল হিসাবে দেখতেই বেশি আগ্রহী। এইসব লৌকিকতা, অলৌকিকতা সম্বলিত ধর্মের আবেদন সাধারনের কাছে যেভাবেই গৃহীত হোক চূড়ান্ত বিচারে সমাজে ও রাষ্ট্র পরিচালনায় ধর্মীয় আইনকে সাংঘর্ষিক হিসাবেই উপস্থাপন করছে।

মুহাম্মদের (সাঃ) সমাজ সংষ্কারের ও ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠার যে অংগীকার সেটা বর্তমান মুসলমানরা কতটুকু নিতে পেরেছে সেই প্রশ্ন তোলা যৌক্তিক।

মুহাম্মদের (সাঃ) প্রথম স্ত্রী খাদিজা একজন বিধবা এবং তার চেয়ে বেশি বয়স্ক ছিলো। এখনকার মুসলিম রা বহুবিবাহের প্রশ্ন আসলে মুহম্মদের (সাঃ) উদাহরন নিয়ে আসে  কিন্ত মুহম্মদের(সাঃ) বিধবা বিবাহের যে যুগান্তকারী সমাজ সংষ্কারের টিচিং আছে সেটা নেয় না। সতিচ্ছেদ খুজে। বিধবার কি সতিচ্ছেদ ছিলো?

মদীনা সনদের উপর নিজ হাতে বিসমিল্লাহ কেটে দিয়ে মুহম্মদ(সাঃ) যে টিচিং দিলো তা হলো যে সংবিধানের ধর্ম নাই। সংবিধান রাষ্ট্রের সব নাগরিকের, সব ধর্মের মানুষের দুনিয়াবী কন্ট্রাক্ট। এটা কোরান না যে বিসমিল্লাহ দিয়ে শুরু করতে হবে। আমরা রাজনৈতিক ইভিল মাইন্ডসেট থেকে সংবিধানে বিসমিল্লাহ লাগাইলাম, চেয়ার টেবিল কে ধার্মিক বানাইলাম, রাষ্ট্রের মত বায়বীয় জিনিসের ধর্ম দিলাম। রাষ্ট্রের নাকি ধর্ম ইসলাম? রাষ্ট্রের আবার ধর্ম কি? রাষ্ট্র ধর্ম দিয়ে সবাই বেহেশতে চলে যাবো, তাই মনেমনে ভেতরে ভেতরে স্বপ্ন দেখি দুনিয়াবী হুর ঐশ্বরিয়াকে।

আমি শুধু দুইটা খুব কমন উদাহরন বললাম। এমন হাজার হাজার উদাহরন আছে। মুহম্মদ(সাঃ) অন্যতম একজন সমাজ সংষ্কারক ছিলেন। তার টিচিং না নিয়ে শুধু ইয়া নবী সালামুয়ালাইকা মিলাদ পড়লে দুনিয়াবী আর আখেরাতের কি লাভ হবে জানি না, তবে মিলাদ শেষে গৃহ কর্তা ১০০ টাকা সালামী দিবে এটা জানি।

অন্য ধর্ম প্রচারক থেকে মুহম্মদ(সাঃ) ভিন্ন। কারন বাকীরা শুধু ডিভাইন এন্টিটি নিয়ে বলেছে। তারা শাসক হিসাবে  আবিভূর্ত হয় নাই। এমনকি গৌতম রাজত্ব ছেড়ে পরে ধর্ম প্রচারক হইছে। সেই অর্থে মুহাম্মদ(সাঃ) ভিন্ন কারন সে কঠিন একটা রিস্ক নিছে শাসনের নামে। শাসনতন্ত্র অত্যন্ত জটিল একটা কাজ। ডিভাইন ল দিয়ে ন্যায় বিচার সাম্যের কথা বলা সোজা কিন্ত রিয়েল লাইফ শাসনে এক্সিকিউট করা কত কঠিন সেটা একজন সোশ্যাল সায়েন্স ছাত্র হিসাবে একটু বুঝি। অনেক পক্ষ, প্রতিপক্ষ এবং অনুচর তৈরি হয়। সুবিধাভোগী ও সুবিধাবঞ্চিত শ্রেনী তৈরি হয়। এইসব সমস্যা অন্যান্য ধর্ম প্রবক্তা ফেস করে নাই কিংবা এটার জটিলতা বুঝতে পেরে এড়িয়ে গিয়েছিলো। মুহম্মদ(সাঃ)  এই কঠিন কাজটা করেছে, এবং বলা যায় সফলতার সাথে করেছে। এইটা নিয়ে আলোচনা নাই। আলোচনা হচ্ছে মিষ্টি খাইতো কিনা, বিয়ে কয়টা করছে, সহবাসের আগের গোসল করবে নাকি পরে গোসল করবে এইসব নিয়ে। যেটা পালন করা কঠিন সেইটাতে নাই যেটা করলে নিজের সুবিধা হয় সেটা জোর গলায় বলে নিজের ফায়দা নিতে গিয়ে ধর্মকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছি?

মুহম্মদ(সাঃ) নিজে যুদ্ধ করেছে। এ-ই যুদ্ধ মানে অন্য ধর্মাবলম্বীকে কতল করার টিচিং না। এ-ই যুদ্ধ মানে মানুষের নিজের আত্মরক্ষার অধিকার। মুহম্মদ(সাঃ) ন্যায় নীতির কথা বলায় যখন তাকে আঘাত করতে আসে তখন তিনি আত্মরক্ষার জন্য যুদ্ধ করেছেন। এটার আরেকটা টিচিং হচ্ছে যুদ্ধ মানব ইতিহাসের এক অনিবার্য উপাদান, এ-ই সত্য মেনে নেয়া। অর্থাৎ শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় বিপ্লব,  যুদ্ধ এড়ানো যায় না। আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান একি কথাই বলে, বিপ্লব ছাড়া রাষ্ট্রের গতি মন্থর হয়ে যায়। কিন্ত মুহম্মদ(সাঃ) বলে নাই নিরপরাধদের কতল করতে, মুহম্মদ(সাঃ) বলে নাই অন্য ধর্মাবলম্বীদের মারতে। বরং বিদায় হজ্বের ভাষনে সব ধর্মের সহবস্থানের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে গেছে, আর মদীনা সনদে সেটাতো সাংবিধানিকভাবেই আছে।

খুব মনযোগ সহকারে দেখলে আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার গোড়াপত্তন মুহম্মদের (সাঃ) দর্শনে আছে। সংবিধান (মদীনা সনদ), যাকাত ও জিজিয়া কর (রেভিনিউ সিস্টেম), গর্ভনেন্স শিফটিং (নির্দিষ্ট সময় পরপর শাসক পরিবর্তন হওয়া)। মুহম্মদ(সাঃ) রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে নাই। যারা বাপের পরে পোলা এমপি হয়ে ইসলাম বলে চিল্লায় সেখানে কোথায় ইসলামের টিচিং? পীরের পোলা পীর হয়। এরমত ভন্ডামী আর কি হতে পারে?

মুহম্মদের(সাঃ) মেয়ে ছিলো, স্ত্রী ছিলো তাদের কাছে ক্ষমতা উইল করে দিয়ে যায় নাই। অনেকে বলবে আবু বকর তার শ্বশুর আর বাকী তিন খলিফা তার আত্মীয়,  যদিও উমর তার খুব কাছের আত্মীয় না। তবে এ-ই ব্যবস্থা মুহম্মদ(সাঃ) জীবিত থাকাকালীন বলে যায় নাই। মৃত্যুর আগে মুহম্মদ(সাঃ) বলে যায় নাই আবুবকর তার রিপ্লেসমেন্টে রাজ্য চালাবে। বরং বয়োজেষ্ঠ্য হিসাবে তখন সর্বসম্মতিক্রমে তাকে খলিফা বানানো হয়েছিলো। যদিও খেলাফত নিয়ে ক্যু, পাল্টা ক্যু, শিয়া -সুন্নী বিভক্তি অনেক ইতিহাস আছে। মুহম্মদ(সাঃ) থাকাকালীন এসব হয় নাই। তার অনুসারীরা তার টিচিং না নিতে পেরে এসব করছে।

এমনকি কথায় কথায় এখন যারা কোরানের ব্যাখা নিজের মত দেয়, বলে কোরানে এভাবে লেখা আছে মানে এভাবেই হবে,কিন্ত কোরান কয়েকবার সংষ্কার হয়েছে এ-ই ইতিহাস মাথায় নেয় না। কোরানে জের জবর পেশ এগুলো পরে যোগ হয়েছে মুহম্মদের(সাঃ) মৃত্যুর পর। গ্রামাটিকালি কোরান কয়েকবার সংষ্কার হয়েছে। এসব জানতে হবে। পড়তে হবে। কোরান জীবন বিধান এটা মেনে নেয়া আর সেটাকে বৈজ্ঞানিক প্রমান করতে গিয়ে বিজ্ঞানের সত্য খোজার প্রক্রিয়ার সাথে সংঘর্ষ বাধানো একপ্রকার মূর্খতা। কোরান যদি অবশ্য পালনীয় আইন হয় তাহলে সেটার মধ্যে বিজ্ঞানের মত এক্সপেরিমেন্টাল ব্যাপার খোজা কতটুকু যৌক্তিক?

 বাদশাহ ফয়সলের দৃষ্টি আকর্ষন করার জন্য চিকিৎসক মরিস বুকাইলি কোরানকে বিজ্ঞান প্রমান করতে গিয়ে যে বই লিখেছিলো মাথামোটা মুসলমানরা বুঝে না বুঝে সেই গ্রন্থের রেফারেন্স দিয়ে সেই কুপমুন্ডকতায় আটকে থাকে। একধরনের ফলস সুপরিয়রিটিতে ভোগে, আহা কোরান কত বিজ্ঞান ময়?? আরে ভাই সেটা মরিস বুকাইলিকে কেন বলা লাগছে? তুমি গবেষনা করে বের কর নাই কেন?? কারন তুমি অন্ধ।। তুমি ধর্মান্ধ। তাই অন্যরা কিছু আবিষ্কার করলে তারপর খুজতে বসে যাও কোন আয়াত দিয়ে ভুল ভাল ব্যাখা দিয়ে আরো অনেক মানুষকে বোকা বানিয়ে ফায়দা নিবা।। অন্যের কোন আবিষ্কারের সাথে তুলনা না করে নিজে গবেষনা করে আবিষ্কার করে তারপর ঘোষনা দাও কোরানের এ-ই আয়াত থেকে এইটা আবিষ্কার করছো। আইনকে আইনের জায়গায় রেখে বিজ্ঞান চর্চা কর মুক্তমনে। গভীরভাবে দেখলে কোরান আর বিজ্ঞান সাংঘর্ষিক না। দুটোই দুইভাবে চরম সত্যকে খোজার প্রক্রিয়া।।

ধর্মে দুইটা ব্যাপার থাকে, একটা ডিভাইন আরেকটা মানডেইন। ডিভাইন মানে স্পিরিচুয়ালিটি আর মানডেইন মানে দৈনন্দিন জীবনে কিভাবে ন্যায় বিচার সাম্য, সহবস্থান,  কর্ম এগুলো চালানো। মানে পার্থিব। এ-ই দুটার মধ্যে ট্রাঞ্জিশন টা খুব ইলুসিভ। আমরা মানডেইন আর ডিভাইনের মধ্যে যে পার্থক্য আছে সেটা বুঝতে হলে গবেষনা দরকার, অধ্যয়ন দরকার। সেটা নাই। আছে গরু কিভাবে জবেহ করবে, মাইয়া কম বয়স থাকতে বিয়ে করতে হবে এইসব।

মুহম্মদ(সাঃ) একজন অসাধারন সমাজ সংষ্কারক ও রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন। তার কাজ কে নিয়ে নির্মোহভাবে গবেষনা করতে হবে। এগিয়ে নিতে হবে। টিচিং টা নিতে হবে। আজান দিয়ে করোনার মত মহামারী কিভাবে দূর হবে আমি কোন হাদীসে খুজে পাই নাই। এমনকি আজানের ব্যাপারটা কোরানে ছিলো না। কোরানে নামাজের কথা ছিলো পরে মুহম্মদ(সাঃ) ভেবেছে নামাজে ডাকার জন্য একটা আহবান থাকা উচিত। এমনকি মুহম্মদ(সাঃ) নিজে আজানের লিরিক্স লিখে নাই। এটা একটা আহবান কিংবা এলানের মত। এটা ঐশ্বরিক কিছু না। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সময়ে নামাজ পড়ার আহবান। এ-ই সহজ সত্যটাই বুঝার জন্য একটু মাথা খাটাতে পারছি না আমরা। শুধু ইয়া নবী সালামু আলাইকা আর তবারকের জিলাপী খেয়ে বেহেশতে যাওয়ার দৌড়ে কে আর আগে ফার্স্ট হবো সেটাতে মগ্ন।

পানি পড়া দিয়ে মুহম্মদ(সাঃ) কোন রোগের চিকিৎসা করছিলো? কেউ কি জানেন? নবীজীর যখন একবার রোগাক্রান্ত হয়েছিলো তখন উনি চিকিৎসকের শরানপন্ন হয়েছিলো। উনি কোরানের আয়াত দিয়ে ঝাড় ফুক করে নিজের চিকিৎসা করে নাই। সেই রোগমুক্তির দিনকে আমরা আখেরী চাহার চোম্বা হিসাবে পালন করি। মুহম্মদ(সাঃ) নিজে চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের সরনাপন্ন হয়ে বুঝিয়ে গিয়েছিলো রোগ শোক হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রীষ্টান মানে না। রোগের চিকিৎসা ঝাড় ফুক দোয়া পানি পড়া না। এসব যারা বলে তারা সত্যকারের ধর্ম চর্চাকারী হতে পারে না, তারাই ধর্মের বড় শত্রু। মুহম্মদ(সাঃ) কে নিয়ে গবেষনা করতে হবে। তার দর্শন, রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি, সমাজে ন্যায় ও সাম্য প্রতিষ্ঠার অবিচল সংগ্রামের শিক্ষা নিতে হবে।। শুধু ইয়া নবী সালামুয়ালাইকা দিয়ে বেহেশত যাওয়া গেলে এত কোরান হাদিস ইজমা কিয়াসের কি দরকার ছিলো?

আচ্ছা ওয়াজ কি পেশা?  মুহম্মদ(সাঃ) কি ওয়াজ করে অর্থ গ্রহন করতো? নাকি ইসলাম ধর্ম প্রচার করে অর্থ নিতো? রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগে নিজে ব্যবসা করতো আর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর সেটার পরিচালনা বাবদ উনার সামান্য ভাতা ছিলো। তারমানে ওয়াজ ইসলামের দৃষ্টিতে পেশা হতে পারে না। ধর্মের বানী প্রচার করে অর্থ গ্রহন কোন হাদিসে লেখা আছে? যারা এসব করে  তারা কতটুকু ধর্মের সত্য প্রচারক আর কতটুকু জীবকার তাগিদে একপ্রকার ধান্দা সেটা যদি বিবেচনা করতে না পারেন তাহলে আপনি সাঈদীকে চাদে দেখবেন আর মিথ্যা গল্প ছড়াবেন নীল আর্মস্ট্রং চাদে নবীজীর পায়ের ছাপ দেখে ইসলাম গ্রহন করেছিলো। এ-র মত ডাহা মিথ্যা একটাও নাই। মিথ্যা আর গালবাজি দিয়ে ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব হয় না, বরং নিজের মূর্খতার কারনে এত সুন্দর ন্যায় ও সাম্যের একটা ধর্ম অপমানীত হয়। ধর্ম শ্রেষ্ঠত্বের রেইস না, ধর্ম নিজের আত্মার পরিশুদ্ধির রেইস। আপনার আচরনই আপনার ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব, আপনার গালবাজি আর মিথ্যা ওয়াজের নামে বাগাড়ম্বর না।। এইবার বলেন ঠিক কিনা?

লেখা: বাতেন মোহাম্মেদ
https://www.facebook.com/baten.ctg

- এপ্রিল ২৩, ২০২০ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন

মঙ্গলবার, ৭ এপ্রিল, ২০২০

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত!

এইচ আর আবির: দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে সাধারণ ছুটি বাড়িয়ে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে বাড়ানো হয়েছে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটিও। করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় আসছে রমজান ও ঈদুল ফিতরের ছুটি সমন্বয় করে উদ্ভুত পরিস্থিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আগামী ৩০ মে পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হতে পারে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।

এর আগেও দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঈদুল ফিতরের পর খোলার সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়ে গণভবনে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে বলেও জানা গেছে। এদিকে ঘোষিত সাধারণ ছুটি পহেলা বৈশাখের ছুটি সঙ্গে সমন্বয় করে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হয়েছে। আবার এর ১০ দিন পর শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান। ফলে রমজান এবং ঈদুল ফিতরের ছুটি সমন্বয় করে আগামী ৩০ মে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলার সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

এছাড়া রমজানের আগে আবাসিক শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসলে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পাশাপাশি বন্ধ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হলগুলোও। এতে করে শিক্ষার্থীরা বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন। এখন যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করা হয়, তাহলে সকল শিক্ষার্থীই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে ফিরে আসবে, এতে করে ঝুঁকি আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঈদুল ফিতরের পরে খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেছেন, এই পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একবারে ঈদের পর খোলার ঘোষণা দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। কেননা ২৪ এপ্রিল রোজার ছুটি শুরু হয়ে যাবে। এদিকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ। বিদ্যমান শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, ২৪ এপ্রিল রোজার ছুটি শুরু। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলেও ১৪ এপ্রিলের পর রোজার ছুটির আগ পর্যন্ত কর্মদিবস আছে মাত্র ৬টি।
এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, আমাদের এখনকার অগ্রাধিকার হচ্ছে বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা। এরপর পরিস্থিতির উন্নতি হলে ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে।

এর আগে গণভবনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি দীর্ঘায়িত করার জন্য একটি বৈঠকে অনানুষ্ঠিক আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল, খাদ্যমন্ত্রী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী, ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রীসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত থাকার কথা ছিল।
আর করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি দীর্ঘায়িত হলে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা যাতে ব্যাহত না হয় এর জন্য ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠদানের ভিডিও ক্লাস বাংলাদেশ সংসদ টেলিভিশনে সমপ্রচার করা হচ্ছে। ছুটির পর ক্লাস খুললে টিভির ক্লাসের মূল্যায়ন নেয়া হবে জানায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।

এর অংশ হিসেবে গত ২৯ মার্চ থেকে মাধ্যমিক স্তরের পাঠদান চলছে সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনে। একই টিভিতে আজ দুপুর ২টায় শুরু হচ্ছে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের পাঠদান। শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৬টি শ্রেণির ২০ মিনিট করে আলাদা পাঠদান করা হবে।
পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদেরও অনলাইনে লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোনো শিক্ষক চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কানেকটিভি ‘বিডিরেন’ ব্যবহার করে লেকচার দিতে পারছেন। এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের এই মুহূর্তের অগ্রাধিকার হচ্ছে মহামারী মোকাবেলা। আমাদের অনেক ছাত্রছাত্রী দেশ-জাতির সেবায় নিয়োজিত। তাই এ মুহূর্তে লেখাপড়ার চেয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা জরুরি। দুর্যোগ শেষ হলে আমরা লেখাপড়ার ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য করণীয় নির্ধারণ করব।

সূত্রঃ The Daily Campus 
- এপ্রিল ০৭, ২০২০ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন

বুধবার, ১ এপ্রিল, ২০২০

করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার: কবে পাচ্ছি আমরা?

সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক: এই লেখার সময় পর্যন্ত পুরো বিশ্বে ৩৫টি বায়োফার্মা কোম্পানি এবং ইউনিভার্সিটি ল্যাব করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করার চেষ্টা করছে। এদের মধ্যে ৪টি ভ্যাকসিন এর এনিম্যাল টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। মার্কিন কোম্পানি Moderna সর্বপ্রথম মানব শরীরে ট্রায়াল শুরু করেছে। আরো বেশ কিছু ভ্যাকসিন এর হিউমান ট্রায়াল শুরু হতে যাচ্ছে শ্রীঘ্রই।

তাহলে কি খুব শীঘ্রই আমরা করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন ব্যবহারের জন্য পেতে যাচ্ছি? দুঃখজনকভাবে এর উত্তর হচ্ছে - "না"। যদি সব ধাপ এক বারেই আমরা অতিক্রম করতে পারি তাহলেও এই ভ্যাকসিন পেতে আমাদের আরো এক থেকে দেড় বছর সময় লাগবে। কিন্তু কেন? জানতে হলে আমাদের বুঝতে হবে করোনা ভাইরাস এবং ভ্যাকসিন আবিষ্কার সম্পর্কে কিছু জরুরি কথা।

করোনা ভাইরাস একটি positive stranded RNA ভাইরাস। এই ধরণের ভাইরাসের বিভিন্ন structural এবং non - structural প্রোটিন সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের খুব ভালো জ্ঞান রয়েছে, যা এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করার পথ কিছুটা সহজ করে দিয়েছে। উপরন্তু চীনে করোনা ভাইরাস এর আক্রমণের পর সেদেশের বিজ্ঞানীরা এই ভাইরাসের জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল সিকুয়েন্সিং করেছেন এবং সেই তথ্য সারা বিশ্বের সব বিজ্ঞানীদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। ২০০২ সালে চীনের Sars ভাইরাসের জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল এর সাথে করোনা ভাইরাসের জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল এর প্রায় ৮০-৯০% মিল রয়েছে। এসব কারণে এখন পর্যন্ত ৩৫ টি ল্যাবে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা হয়েছে।

খুশির ব্যাপার, তাইনা? কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানে সব আবিষ্কারই মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছতে পারেনা। কেন পায়না সেটা জানতে হলে আমাদেরকে জানতে হবে একটি ভ্যাকসিন ল্যাবে আবিষ্কার হবার পর থেকে মানুষের ব্যবহার উপযোগী হবার মাঝে কি কি সাইন্টিফিক স্টেপ ফলো করতে হয়।

ল্যাবে ভ্যাকসিন এর প্রোটোটাইপ আবিষ্কারের পর সেটি প্রথমে পরীক্ষা করা হয় অন্য প্রাণীর শরীরে, যেমন - ইঁদুর, খরগোশ, গিনিপিগ, বা বানর। এই ধাপে দুটি বিষয় যাচাই করা হয় - ভ্যাকসিনটি নিরাপদ কিনা এবং সেটি ওই প্রাণীর শরীরে কাজ করছে কিনা। অধিকাংশ ভ্যাকসিনই এই ধাপে ঝরে যায়। যেসব ভ্যাকসিন এই ধাপ পার করতে পারে, তাদেরকে তখন হিউমান ট্রায়াল এর জন্য নির্বাচিত করা হয়। হিউমান ট্রায়াল তিন ধাপে করা হয়। ফেজ ১ ট্রায়াল এ সাধারণত কয়েক ডজন সুস্থ ব্যক্তির মধ্যে ভ্যাকসিনটি ইঞ্জেক্ট করে দেখা হয় ভ্যাকসিনটি মানুষের শরীরে ব্যবহার করার জন সেফ কিনা এবং ভ্যাকসিনটি আমাদের শরীরে সঠিক ইমিউন রেসপন্স তৈরী করছে কিনা। ফেজ ২ ট্রায়াল করা হয় কয়েকশো মানুষের মধ্যে, আর ফেজ ৩ ট্রায়াল করা হয় কয়েক হাজার মানুষের মধ্যে। সবগুলি ট্রায়াল ফেজেই একদলকে ভ্যাকসিন দিয়ে আর অন্যদলকে প্লাসেবো (দেখতে ভ্যাকসিনের মত কিন্তু ভ্যাকসিন নয়) দিয়ে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা এবং সেফটি দেখা হয়। সবগুলি ট্রায়াল ফেজে কার্যকারিতা এবং সেফটি প্রমাণিত হলেই অনুমোদন মিলে ভ্যাকসিন বাণিজ্যিকভাবে তৈরী করার। এই ধাপগুলি সম্পন্ন করতে কয়েক বছর থেকে শুরু করে এক যুগের বেশি সময়ও লেগে যেতে পারে। যেমন - ইবোলা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে সর্বসাকুল্যে ৬ বছর সময় লেগেছিলো।

করোনা ভাইরাস যেহেতু মহামারী আকার ধারণ করেছে, সেহেতু এর ভ্যাকসিন পেতে কি কিছু ধাপ না মেনে গেলে হয় না? না, হয়না। তবে আশার বিষয় হচ্ছে FDA থেকে এনিম্যাল এবং হিউমান ট্রায়াল একইসময়ে করার পারমিশন দেয়া হয়েছে, যাতে করে ধাপগুলি তাড়াতাড়ি সময়ে শেষ করা সম্ভব হয়। ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আরো বড় একটি বাধা হচ্ছে FDA এর অনুমুতি পাওয়ার পর থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন করতে আরো বেশ কিছু সময় চলে যায়। FDA কিছু কোম্পানিকে রিস্ক নিয়ে আগে ভাগেই বাণিজ্যিক উৎপাদন করার জন্য বলছে - রিস্ক এই জন্য যে যদি প্রমাণিত হয় যে ভ্যাকসিনটি কার্যকর বা সেফ নয়, তাহলে কোম্পানির পুরো ইনভেস্টমেন্ট লস হবে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন সবকিছু যদি প্ল্যানমাফিক হয় তাহলে হয়তো আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে আমরা করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারবো।

ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে। সব ভ্যাকসিন কিন্তু মানবদেহে প্রবেশের পর ওই ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দিতে পারেনা, অনেক সময় ভাইরাসের আক্রমণকে উল্টা আরো তীব্র করে ফেলে। যেমন - respiratory syncytial virus এর ভ্যাকসিন শিশুদের শরীরে দেয়ার পর ওই ভাইরাস শিশুদেরকে আরো বেশি অসুস্থ করেছিল। করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি অবশ্যই পরীক্ষা করে দেখতে হবে এনিম্যাল ট্রায়ালে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে অনেকসময় ভাইরাস কিন্তু নিজের রূপ পরিবর্তন করে এবং তখন ভ্যাকসিন কাজ করে না। করোনা ভাইরাসের স্পাইক (S) প্রোটিন এর বিরুদ্ধে এখন ভ্যাকসিন আবিষ্কার হচ্ছে, কিন্তু কিছু কিছু ল্যাবে মেমব্রেন (M) এবং এনভেলপ (E) প্রোটিনের বিরুদ্ধেও ভ্যাকসিন আবিষ্কারের কাজ হচ্ছে।

সুতরাং বুঝতেই পারছেন আমাদেরকে বেশকিছুদিন অপেক্ষায় থাকতে হবে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন পাবার জন্য। তাই আসুন বেশি বেশি করে বাসায় থাকি এবং হাত পরিষ্কার করি, যাতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারি আমরা।

বি. দ্র. ভ্যাকসিন নিয়ে আমি গবেষণা করিনা। তাই এই লেখাটি লেখার সময় আমি Dr Gregory Poland, Director, Mayo Vaccine Research Group এবং Dr Fauci, Director, National Institute of Allergy and Infectious Diseases, USA এর দুটি ইন্টারভিউ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছি।

লেখনী:
ডাঃ মোঃ সাজেদুর রহমান শাওন
এপিডেমিওলোজিস্ট
ইউনিভার্সিটি অফ নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া
- এপ্রিল ০১, ২০২০ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
পুরাতন পোস্টসমূহ হোম
এতে সদস্যতা: পোস্টগুলি (Atom)

NTRCA ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ পাবেন আরও ৪৫ হাজার শিক্ষক

মামলা জটিলতায় প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক পদ শূন্য থাকায় ব্যা...

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

  • হোম
Powered By Blogger

আমার সম্পর্কে

আমার ফটো
Abir
আমার সম্পূর্ণ প্রোফাইল দেখুন

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

  • নিঝুম দ্বীপ : এক অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি!
    নিঝুমদ্বীপের পরিচিতিঃ 'নিঝুম দ্বীপ' বাংলাদেশের একটি ছোট্ট দ্বীপ । এটি নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অন্তর্গত । ২০০১ সালের ৮ এ...
  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত!
    এইচ আর আবির: দে শে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বিভিন্ন...
  • সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে: প্রধানমন্ত্রী
    করোনা পরিস্থিতির কারণে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশ...
  • এইবার বলেন, ঠিক কিনা?
    আর একদিন পর রমজান।। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের কাছে এটা একটা পবিত্র মাস। তবে এইমাসের লৌকিক আচরন থেকেও সাম্যের যে অসাধারন শিক্ষা আছে সেটা দিন ...
  • বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশের মানচিত্র: বঙ্গোপসাগরে জেগে উঠছে নতুন আরেক বাংলাদেশ ।
    চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বরিশাল, খুলনাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সাগরের বুক চিরে জেগে উঠছে নতুন নতুন ভূখণ্ড। বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে উঠছে আরেক নতুন...

ব্লগ সংরক্ষাণাগার

  • ▼  2021 (1)
    • ▼  মার্চ (1)
      • NTRCA ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ পাবেন আরও ৪৫ হাজার ...
  • ►  2020 (7)
    • ►  জুলাই (1)
    • ►  মে (1)
    • ►  এপ্রিল (5)

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

মোট পৃষ্ঠাদর্শন

এতে সদস্যতা

পোস্টগুলি
Atom
পোস্টগুলি
সব কটি মন্তব্য
Atom
সব কটি মন্তব্য
এই সাইটের যে কোনো লেখা আপনার প্রয়োজনে আপনি ক্রেডিটসহ কপি করতে পারবেন। . ইথেরিয়াল থিম. Blogger দ্বারা পরিচালিত.